কুমিল্লার চান্দিনায় ধানের শীষ প্রতীকের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ এবং নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আলী আশরাফ এমপি’র সমর্থিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ঘটে।
শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার বরকরই ইউনিয়নের ফতেহপুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৯ জন নেতা-কর্মী আহত হয়।
আহতরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আলী আশরাফ এমপি’র ঘনিষ্ট আত্মীয় উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন (৩৮), বরকরইট গ্রামের মনির হোসেন মাস্টারের ছেলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম এলাহী (৩৫), ফতেহপুর গ্রামে আব্দুল কাদের মিয়ার ছেলে ইউসুফ (২৯), মনির হোসেন এর ছেলে সোহেল (২৫), নাটিঙ্গী গ্রামের সাহাব উদ্দিন এর ছেলে সোহেল (৪০), ইব্রাহীম খলিল এর ছেলে ফারুক (৩৮) এবং ধানের শীষ প্রতীক সমর্থিত তিন ভাই ফতেহপুর গ্রামের মন্দির মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন (২৬), জুয়েল হোসেন (২০), জাকির হোসেন (৩০)। আহত গিয়াস উদ্দিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় একটি মটরসাইকেল ভাঙচুর এবং স্থানীয় বাজারের দোকান-পাট ভাংচুর করে তারা।
এদিকে ঘটনার পর সন্ধ্যায় ড. রেদোয়ান আহমেদ এর বিচার চেয়ে চান্দিনা থানার সামনে বিক্ষোভ করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
ড. রেদোয়ান আহমেদ জানান, পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ও স্থানে প্রশাসনের অনুমতিতে শনিবার কাদুটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আমার জনসভা ছিল। এর আগে ফতেহপুর বাজার এলাকায় আমার একটি উঠান বৈঠকও ছিল। আমি নবাবপুর বাজার থেকে ফতেহপুর রওয়ানা হলে গিয়াস উদ্দিন এর নেতৃত্বে ২০-২৫ জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী আমার ফতেহপুর বাজার এলাকার উঠান বৈঠকে হামলা চালায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর তারা আমার উপর হামলার উদ্দেশ্যে ধর ধর বলে ধাওয়া করে এগিয়ে আসলে আমার লোকজন তাদের বাঁধা দেয়। এ সময় আমি দ্রুত স্থান ত্যাগ করে মহিচাইল বাজারে চলে আসি। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আমার তিন নেতা-কর্মী আহত হয়।
চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান তপনবক্সী জানান, ড. রেদোয়ান আহমেদ এর পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম ছিল কাদুটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। আর উপজেলা যুবলীগের পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম ছিল ফতেহপুরে। ফতেহপুর বাজার এলাকায় উপজেলা যুবলীগ আয়োজিত উঠান বৈঠক চলাকালে ড. রেদোয়ান আহমেদ এর গাড়ি বহর সেখানে পৌঁছে। এসময় উপজেলা যুবলীগ নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ভেবে জয় বাংলার শ্লোগান দিয়ে এগিয়ে যায়। এসময় এলডিপি নেতা-কর্মীরা তাদের উপর আক্রমণ করে ৬ জনকে আহত করে। তাদের মধ্যে গিয়াস উদ্দিন এর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল ফয়সল জানান, যুবলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আশেক এলাহীর নেতৃত্বে ফতেহপুর বাজার এলাকায় তাদের বৈঠকে ছিল। এসময় ড. রেদোয়ান আহমেদ এর গাড়ি বহর থেকে এলডিপি নেতা-কর্মীরা গিয়াস উদ্দিনকে লক্ষ করে হামলা চালায়। ঘটনার পর পর আমরা ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
সুত্রঃ শীর্ষকাগজ