প্রচারণা চালানোর সময় গতকাল রোববার দুপুরে নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের বিএনপির দলীয় প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিনকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ সময় সাবিনা ইয়াসমিনের তিন সহযোগীকে হাতুড়িপেটা করে গুরুতর আহত করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁদের গুলি করে হত্যা করা হতে পারে। গতকাল দুপুরে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাবিনা ইয়াসমিন এসব অভিযোগ করেন। তবে জেলা আওয়ামী লীগ এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাবিনা ইয়াসমিন অভিযোগ করেন, মনোনয়ন জটিলতার কারণে তাঁর স্বামী বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। দলের সিদ্ধান্তে তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মাত্র দুই দিন আগে তিনি গণসংযোগ শুরু করেছেন। প্রথম দিনেই তাঁর প্রচার মাইক ভাঙচুর করেছেন নৌকার সমর্থকেরা। রোববার দুপুরে দ্বিতীয় দিনের মতো তিনি সহযোগী নেতা-কর্মীদের নিয়ে নাটোর স্টেশন এলাকায় প্রচারণায় যান। সেখানে নৌকার কর্মী–সমর্থকেরা তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা তিন কর্মীর বাধায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তবে ওই তিন কর্মীকে নৌকার সমর্থকেরা হাতুড়িপেটা করে গুরুতর আহত করেন। এ সময় নেতা–কর্মীদের হুড়োহুড়িতে তিনি মাটিতে পড়ে গিয়ে আহত হন।
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, নৌকার লোকজন আমাকে গুলি করে হত্যা করবে।’ তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান। তিনি জানান, প্রচারণা শুরুর আগে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশকে অবহিত করছেন। অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে নিরাপত্তা দিচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাঁর ওপর হামলা চালাচ্ছেন। গত শনিবার রাতেও যুবদলের নেতা নজরুল শিকদারকে রক্তাক্ত করে তাঁর মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী শফিকুল ইসলাম আমার স্বামী খারাপ মানুষ বলে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছেন। আমি যদি খারাপ মানুষের স্ত্রী হই, তাহলে তো লোক আমাকে ভোট দেবেন না। তাহলে তাঁরা কেন আমাকে প্রচারণা চালাতে দিচ্ছেন না? আসলে তাঁরা জানেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমার বিজয় নিশ্চিত। এই ভয়ে তাঁরা আমার ওপর হামলা চালাচ্ছেন। আমাকে প্রচারণা চালাতে দিচ্ছেন না।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক, জেলা যুবদলের সভাপতি এ হাই তালুকদার, নাটোর ও নলডাঙ্গা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রূপালী খাতুন প্রমুখ। এ সময় হামলায় আহত জেলা যুবদলের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, নিচা বাজারের যুবদলের কর্মী আবদুল ওয়াদুদ ও বড়গাছা এলাকার ফিরোজ শেখকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুর্তজা আলী অবশ্য দাবি করেছেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এসব হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
সুত্রঃ প্রথম আলো