নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে গতকালও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গায়েবি মামলায় গ্রেফতার ও ধরপাকড় অব্যাহত থাকে। সাতক্ষীরায় ২০ দল মনোনীত ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা গাজী নজরুল, উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল বারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়াও গাজীপুরের শ্রীপুর, নীলফামারীর ডোমার, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বিরোধী দলের ২৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো রিপোর্ট তুলে ধরা হলোÑ
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরা-৪ শ্যামনগর আসনে ২০ দলীয় জোট মনোনীত প্রার্থী (জামায়াত) মুক্তিযোদ্ধা গাজী নজরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল বারী ও গাজী নজরুল ইসলামের প্রস্তাবক শেখ গোলাম বারীকে আটক করেছে শ্যামনগর থানা পুলিশ। গতকাল বেলা আড়াইটায় শ্যামনগর উপজেলার ইসলামপুর গোডাউন মোড়ে গাজী নজরুল ইসলামের বসতবাড়ি থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। পুলিশের দাবি তার বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে মামলা রয়েছে। তবে গাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রীর দাবি তার স্বামীর বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্টভুক্ত মামলা ছিল না। তার স্ত্রীর দাবি তার স্বামীর জনপ্রিয়তা ঠেকাতে মাঠে নেমেছে সরকারদলীয় প্রার্থীর সন্ত্রাসী বাহিনীসহ পুলিশ প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে নজরুল ইসলামের মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিককে বিনা ওয়ারেন্টে সাতক্ষীরা কোট চত্বর থেকে আটক করা হয়। পুলিশ যত বেশি এলাকাতে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ তত বেশি আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর সাথে কথা হয়। তারা জানান, নিরপেক্ষ ভোট হলে পুলিশের কারণে আওয়ামী লীগের পরাজয় নিশ্চিত। এর পরও ভোটাররা ধানের শীষে প্রতি আস্থাশীল।
জামায়াতের প্রার্থী গাজী নজরুল ইসলামের জনপ্রিয়তা ঠেকাতে খোদ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৩০টি গায়েবি মামলা করা হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বিএনপি ও জামায়াতের বাছাইকৃত নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে। ভোটরদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ব্যবহার করে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত লোকজনের সরকারি অনুদান বন্ধের হুমকি দেয়া হচ্ছে। সব ক’টি মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। এর পরও নতুন গায়েবি মামলায় চার্জশিটে তার নাম অন্তর্ভুক্তি করার চেষ্টা করছে পুলিশ বলে গাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রী অভিযোগ করেন।
গাজী নজরুলকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জামায়াতের : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৪ আসনে ২০ দলীয় জোটের মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও জামায়াত নেতা গাজী নজরুল ইসলাম এবং শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল বারীকে গতকাল গ্রেফতার করার ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন ভোটারবিহীন একতরফা ব্যালট ডাকাতির নির্বাচনের প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করার যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে তার অংশ হিসেবেই গাজী নজরুল ইসলাম ও মাওলানা আবদুল বারীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ দলীয় জোটের ধানের শীষ প্রতীকের বেশ কয়েকজন জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর নাম ধরে ধরে টার্গেট করে মিথ্যা বক্তব্য দেয়ার পরপরই সাতক্ষীরার গাজী নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করার ঘটনার দ্বারাই প্রতীয়মাণ হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শ্রীপুর (গাজীপুর) সংবাদদাতা জানান, শ্রীপুর উপজেলার বিএনপির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ওলামা দলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ মাওলানা পীরজাদা এস এম রুহুল আমিন মমতাজীকে শ্রীপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। জানা যায়, শ্রীপুরে ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী ইকবাল সিদ্দিকীর ধানের শীষে পক্ষে তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন তিনি। গণসংযোগ চলাকালে শ্রীপুর থানা পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ভোরে শ্রীপুর থানা পুলিশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো: আ: মোতালেব ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি হুমায়ুন কবির সরকারকে নাশকতা মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান।
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীর ডোমারে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপের অভিযোগে জামায়াতের চারজন কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেনÑ উপজেলার পশ্চিম চিকনমাটি খমির উদ্দিনপাড়ার জামায়াতকর্মী জাহাঙ্গীর আলম, একই এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিক, বড় রাউতার আজগর আলীর ছেলে মজিবর মুন্সি, ইউসুফ আলী। এ ঘটনায় রোববার থানায় মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে উপজেলার ডোমার সদর ইউনিয়নের ডোমার-দেবীগঞ্জ সড়কের পেট্রলপাম্প সংলগ্ন মনজুপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে।
তবে জেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রশীদ জানান, পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাটি সত্য নয়। পুলিশ জামায়াতকর্মীদের বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিরোধী দলের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
রোববার ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিরোধী দলের পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন উত্তর ধুমাইটারী গ্রামের মনির উদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে মঞ্জু মিয়া, মহির উদ্দিনের ছেলে হবিবর রহমান, চাচীয়া মীরগঞ্জ গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে নজরুল ইসলাম, দক্ষিণ মরুয়াদহ গ্রামের মোসলেম আলীর ছেলে গোলাম মোস্তফা ও ধুবনী কঞ্চিবাড়ী গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের বিষয়টি থানার ডিউটি অফিসার এএসআই শাহীন মিয়া নিশ্চিত করেন। গতকাল পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠান।
নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে মো: নজমুল হক নামে জামায়াতের এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
গত শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চরারহাট বাজারের তার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। থানায় মামলা রয়েছে বলে নবাবগঞ্জ থানার ডিউটিরত অফিসার জানান।
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, মিরসরাইয়ে বিএনপি-জামায়াতের পাঁচ নেতাকে আটক করা হয়েছে। শনিবার রাতে ও রোববার সকালে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম আতিকুল ইসলাম লতিফী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নিজাম উদ্দিন, বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক দিদারুল আলম মিয়াজী, জামায়াত নেতা নুরুল হুদা হামিদী, কফিল উদ্দিন লতিফী। এ দিকে রোববার সন্ধ্যা ৬টার পর্যন্ত বিএনপি নেতা গাজী নিজাম উদ্দিন ও দিদারুল আলম মিয়াজীর গ্রেফতারের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।
বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী নুরুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, শনিবার রাতে জামায়াত নেতা নুরুল হুদা হামিদীকে আটক করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ, রোববার সকালে মিরসরাই থেকে বিএনপি নেতা আতিকুল ইসলাম লতিফীকে আটক করে মিরসরাই থানা পুলিশ। রোববার সকালে আটককৃত আতিকুল ইসলাম লতিফীকে চট্টগ্রাম আদালতে দেখতে গেলে সেখান থেকে বিএনপি নেতা গাজী নিজাম ও দিদারুল আলম মিয়াজীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়া জামায়াত নেতা নুরুল হুদা হামিদীকে দেখতে গেলে কাজী কফিল উদ্দিন লতিফীকে আটক করা হয়।
জোরারগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার আবেদ আলী জামায়াত নেতা নুরুল হুদা হামিদীকে গ্রেফতারের বিষয়টি স্বীকার করলেও বিএনপি নেতাদের গ্রেফতারের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
মিরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপুল দেবনাথ বলেন, নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতা এ এস এম আতিকুল ইসলাম লতিফী, জামায়াত নেতা কফিল উদ্দিন লতিফীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
রাজাপুরে বিএনপি সভাপতিসহ ৩৪ জনের নামে মামলা
রাজাপুর (ঝালকাঠি) সংবাদদাতা জানান, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা যুবদলের সভাপতি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকারিয়া সুমন ও উপজেলা যুবদলের সম্পাদক শহীদ আল মামুন অভিকসহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখপূর্বক আরো ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার রাজাপুর থানায় এ মামলা করা হয়।
নালিতাবাড়ীতে বিএনপি নেতাদের নামে গায়েবি মামলা!
নালিতাবাড়ী (শেরপুর) সংবাদদাতা জানান, শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা করা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর শনিবার রাতে শহরের গোবিন্দনগর মহল্লায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যেকার দ্বন্দ্বের জেরে বিএনপি নেতাদের নামে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা করা হয়েছে বলে জানান তারা।
জানা গেছে, শনিবার রাতে শহরের ৬ নং ওয়ার্ডে (গোবিন্দনগর মহল্লায়) নৌকা মার্কার নির্বাচনী অফিস নিয়ে আওয়ামী লীগের পৃথক দুই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতি ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার মধ্যরাতে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় অভিযান চালায়। তবে নেতৃবৃন্দ নির্বাচনী কাজে বাইরে থাকায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ জানায়, গোবিন্দনগর মহল্লায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা করা হয়েছে। জনৈক রুবেল মিয়া বাদি হয়ে ওই মামলা করেছেন।
সূত্র মতে, মামলায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আমীন, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী দেওয়ান, যুগ্ম-আহ্বায়ক আলী আশরাফ ভূঁইয়া, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা বেগম, শহর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক পৌরমেয়র আনোয়ার হোসেনসহ প্রায় ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আমীন জানান, শনিবার রাতে আমরা আমাদের প্রার্থী ফাহিম চৌধুরীর নকলা উপজেলার চরকামানীপাড়াস্থ গ্রামের বাড়িতে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে যাই। এ সময় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের (মতিয়া-বাদশা) সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ও হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় পুলিশ আমাদের নামে গায়েবি মামলা দিয়েছে। আমরা যাতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে না পারি এ জন্যই এ মিথ্যা মামলা।
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু হুরায়রা ছাদ মাস্টারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনি পৌর শহরের হবিবপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা। শনিবার মধ্য রাতে জগন্নাথপুর থানা পুলিশের একটি দল তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, নাশকতার মামলায় আবু হুরায়রা ছাদ মাস্টারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল রোববার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জীবননগর ইউনিয়ন বিএনপির দুই মেম্বারসহ তিনজন গ্রেফতার
জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ইউনিয়ন বিএনপির নেতা দুই মেম্বারসহ পুলিশ রোববার দুপুরে তিনজনকে গ্রেফতার করেছেন। গ্রেফতারকৃত দুই ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগÑ তারা বিএনপি প্রার্থীর প নিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলা রায়পুর বাজারে থাকা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। তবে বিএনপির দাবি ওই দিন রাতে বিএনপি নির্বাচনী অফিস উদ্বোধনের পরপরই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে সিহাব নামের এক ছাত্রদল নেতাকে আহত এবং অফিসের ভেতরে থাকা চেয়ার ভাঙচুর করে তি সাধন করে। আবার উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
জীবননগর থানা সূত্র জানায়, জীবননগর উপজেলার বাঁকা রঘুনন্দনপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুল মান্নান ও উপজেলার খয়েরহুদা গ্রামের মৃত নইম উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে কেডিকে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবুল কালাম আজাদ ঝন্টুসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং আওয়ামী লীগের গোলাম হোসেন নামে এক কর্মীকে আহত করে। এ ঘটনায় তাদের তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। ওই মামলায় বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান ও আবুল কালাম আজাদ ঝন্টুকে রোববার দুপুরের দিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ এ সময় উপজেলা শহরের আশতলাপাড়ার সামছুদ্দিনের ছেলে হাবিবুরকে গ্রেফতার করে।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবিÑ যারা এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী মাঠে সরব পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা সাজিয়ে গ্রেফতার করছে। প্রতীক বরাদ্দের পরপরই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একাধিক স্থানে বিএনপির নির্বাচনী অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ মিথ্যা মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে হয়রানি করছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
জীবননগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিরাজুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃতরা বিএনপির নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা থাকায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা কামারুজ্জামানকে আটক করেছে নীলফামারী থানা পুলিশ। শনিবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।
জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি কাজী আব্দুল মালেক জানান, আটককৃত জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকলেও পুলিশ তাকে আটক করে।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত